হজ ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ, আর হজের কেন্দ্রবিন্দু হলো আরাফাতের ময়দানে প্রদত্ত খুতবা—যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণার উৎস। প্রতিবছর এই খুতবা প্রদান করেন একজন সম্মানিত আলেম, যিনি ইসলামি জ্ঞানে প্রাজ্ঞ এবং সৌদি আরবের উচ্চ ধর্মীয় ও বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত। এমনই একজন ব্যক্তি হলেন শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন তার গভীর জ্ঞানের জন্য।
ড. সালেহ বিন হুমাইদ একজন সুপরিচিত সৌদি আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদ ও বিচারপতি। তিনি সৌদি আরবের উচ্চ শাসন পর্ষদ এবং শুরা কাউন্সিল (পরামর্শ পরিষদ)-এর সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে মসজিদ আল-হারাম (মক্কার কাবা শরিফ)–এর ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বক্তৃতা ও খুতবায় ইসলামের শান্তিপূর্ণ, মানবিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে।
সালেহ বিন হুমাইদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি খুতবায় আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোকে ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেন। তার বক্তব্যে থাকে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সহনশীলতা, ন্যায়বিচার, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং নৈতিক জীবনের ওপর গুরুত্বারোপ। শুধু ধর্মীয় নয়, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ নিয়েও তিনি কথা বলেন, যা হজে আগত লক্ষ লক্ষ হাজি ছাড়াও বিশ্বজুড়ে টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইন মাধ্যমে খুতবা শোনার মুসলিমদের মন ছুঁয়ে যায়।
শায়খ সালেহ বিন হুমাইদের শিক্ষাগত পটভূমিও সমৃদ্ধ। তিনি ইসলামি আইন (শরিয়াহ) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং বহু বছর ধরে বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারণে তার বক্তব্যে থাকে বাস্তবতা এবং শরিয়াহ–এর সুশৃঙ্খল ব্যাখ্যার অনন্য সংমিশ্রণ।
এই বরেণ্য আলেম শুধুমাত্র সৌদি আরবেই নয়, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বে একজন শ্রদ্ধেয় ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। হজের মতো একটি মহামূল্যবান ইবাদতে তার খুতবা বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের জন্য হয়ে ওঠে দিকনির্দেশনামূলক, প্রেরণাদায়ী এবং হৃদয় ছোঁয়া এক বার্তা।
সুতরাং, যারা জানার আগ্রহে ছিলেন—হজে খুতবা কে পড়েন, বা সালেহ বিন হুমাইদ কে?—তাদের জন্য বলা যায়, তিনি শুধুমাত্র একজন ইমাম নন, বরং একজন পণ্ডিত, বিচারপতি এবং বিশ্ব মুসলিম সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ।