Russian su-57 ফাইটারজেট কেন সেরা?
সু-৫৭ (Su-57) হল রাশিয়ার তৈরি একটি পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটার জেট, যার মূল্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে হতে পারে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি F-35 ফাইটার জেটের তুলনায় কিছুটা সস্তা হলেও, স্টেলথ ক্ষমতা, সেন্সর সিস্টেম ও ইঞ্জিন প্রযুক্তির দিক থেকে এখনও কিছুটা পিছিয়ে আছে। যদিও এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা উন্নত, তবুও রাশিয়ার চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং কিছু মূল উপাদানের (যেমন উন্নত ইঞ্জিন “Izdeliye 30”) প্রস্তুত না হওয়ায় বিমানটির ব্যাপক উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে ধীরগতিতে এগোচ্ছে। রাশিয়া ২০২৭ সালের মধ্যে ৭৬টি Su-57 জেট সরবরাহের পরিকল্পনা ঘোষণা করলেও বাস্তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব না-ও হতে পারে। সব মিলিয়ে, Su-57 একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প হলেও অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত বাধার কারণে এর পূর্ণ সক্ষমতা ও বিস্তার এখনও অপেক্ষাকৃত সীমিত।
সু-৫৭-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা
১. স্টিলথ টেকনোলজি
সু-৫৭-এর ডিজাইনটি লো-অবজারভেবল (LO) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি, যার অর্থ এটি রাডারে সহজে শনাক্ত করা যায় না। এর বডি রাডার ক্রস-সেকশন (RCS) কমাতে বিশেষ উপাদান ও কাঠামো ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এটি F-22 বা F-35-এর মতো সম্পূর্ণ স্টিলথ নয়, তবে রাশিয়ান প্রযুক্তি অনুযায়ী এটি যথেষ্ট উন্নত।
২. সুপারক্রুজ ও হাইপারসনিক ক্যাপাবিলিটি
সু-৫৭-এর ইঞ্জিন (প্রাথমিকভাবে AL-41F1 এবং ভবিষ্যতে Izdeliye 30) এটিকে সুপারক্রুজ (Supercruise) ক্ষমতা দেয়, অর্থাৎ এটি Afterburner ছাড়াই সুপারসনিক গতিতে উড়তে পারে। এছাড়াও, এটি হাইপারসনিক মিসাইল বহন করতে সক্ষম, যা এটিকে দ্রুত টার্গেট ধ্বংসের সুযোগ দেয়।
৩. অ্যাডভান্সড অ্যাভিওনিক্স ও সেন্সর
- 
N036 বাইকা রাডার: এটি একটি AESA (Active Electronically Scanned Array) রাডার, যা একসাথে多个 টার্গেট ট্র্যাক করতে পারে এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার পরিচালনা করতে সক্ষম।
 - 
IRST (ইনফ্রারেড সার্চ অ্যান্ড ট্র্যাক): এটি রাডার ছাড়াই শত্রু বিমান শনাক্ত করতে পারে, যা স্টিলথ ফাইটারদের বিরুদ্ধে কার্যকর।
 - 
L-band রাডার: এটি উইংয়ের লিডিং এজে বসানো, যা লো-অবজারভেবল টার্গেট শনাক্তে সাহায্য করে।
 
৪. সুপার ম্যানেউভারেবিলিটি
সু-৫৭-এর থ্রাস্ট ভেক্টরিং (3D TVC) এবং অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন এটিকে অত্যন্ত চটপলে করে তুলেছে। এটি “কুলবিট” বা “সুপারকোবরা” ম্যানেউভারের মতো আকর্ষণীয় কৌশল করতে পারে, যা Dogfight-এ একটি বড় সুবিধা দেয়।
৫. মাল্টিরোল ক্ষমতা
সু-৫৭ শুধু এয়ার-টু-এয়ার যুদ্ধেই নয়, এয়ার-টু-গ্রাউন্ড, অ্যান্টি-শিপ এবং ইলেকট্রনিক অ্যাটাক মিশনেও সক্ষম। এটি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র বহন করতে পারে, যেমন:
- 
R-77M এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল
 - 
Kh-59MK2 ক্রুজ মিসাইল
 - 
Kh-35UE অ্যান্টি-শিপ মিসাইল
 - 
KAB-500 বোমা
 
৬. ডিজিটাল ওয়ারফেয়ার সিস্টেম
এতে AI-ভিত্তিক ডিজিটাল সহায়ক ব্যবস্থা রয়েছে, যা পাইলটকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি নেটওয়ার্ক-কেন্দ্রিক যুদ্ধের (Network-Centric Warfare) জন্য উপযোগী।
সু-৫৭ একটি অত্যাধুনিক ফাইটার জেট যা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও শক্তিশালী করেছে। এর স্টিলথ, সুপারম্যানেউভারেবিলিটি এবং মাল্টিরোল ক্ষমতা এটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তবে, স্টিলথ কার্যকারিতা, ইঞ্জিন ইস্যু এবং উচ্চ খরচ এর কিছু দুর্বলতা। সামগ্রিকভাবে, এটি একটি শক্তিশালী যুদ্ধবিমান, তবে পশ্চিমা পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটারদের সাথে প্রতিযোগিতায় এর সাফল্য নির্ভর করছে ভবিষ্যতের আপগ্রেড ও মিশন পারফরম্যান্সের উপর।